ভারতের নাগরিকত্ব প্রমাণের ক্ষেত্রে বড়সড় সিদ্ধান্ত নিল দিল্লি পুলিশ। আধার, প্যান কিংবা রেশন কার্ড আর নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে মান্যতা পাবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বদলে নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে বাধ্যতামূলক করা হল দু’টি নির্দিষ্ট নথির মধ্যে যেকোনও একটির উপস্থিতি—জন্মের শংসাপত্র বা স্থায়ী নিবাসের শংসাপত্র।
সীমান্তে বেআইনি অনুপ্রবেশ, ভিড়ে মিশে যাওয়া বিদেশি নাগরিকদের শনাক্ত করতে নতুন পদক্ষেপ
দিল্লি পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি রাজধানীতে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও মায়ানমারের মতো দেশ থেকে বহু মানুষ বেআইনিভাবে এসে বসবাস করছেন। তাঁদের অনেকেই অবৈধভাবে আধার, রেশন ও প্যান কার্ড তৈরি করে ভারতের নাগরিক হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছেন। এই প্রেক্ষিতেই নাগরিকত্বের নির্ভরযোগ্য প্রমাণ হিসেবে শুধুমাত্র ভোটার আইডি বা পাসপোর্ট নয়, জন্মের শংসাপত্র বা নিবাসের শংসাপত্রকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।

দিল্লি পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “আমরা দেখেছি অনেক অবৈধ অভিবাসী আধার, রেশন বা প্যান কার্ড দেখিয়ে নিজেদের পরিচয় গোপন করছেন। এমনকি রোহিঙ্গা শরণার্থীরাও UNHCR-এর কার্ড দেখিয়ে নাগরিকত্ব দাবি করছেন। তাই নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য নির্দিষ্ট নথির প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।”
আধার, প্যান, রেশন কার্ড—কী কাজে ব্যবহৃত হবে?
দিল্লি পুলিশের তরফে স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে, আধার, প্যান ও রেশন কার্ড শুধুমাত্র প্রশাসনিক ও সামাজিক কল্যাণমূলক কাজের জন্য ব্যবহৃত হবে। নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে এসব নথির আর কোনও গুরুত্ব নেই।
- আধার কার্ড: শুধুমাত্র পরিচয়পত্র, নাগরিকত্বের নয়।
- প্যান কার্ড: কর সংক্রান্ত কাজে ব্যবহৃত হয়।
- রেশন কার্ড: জনকল্যাণমূলক প্রকল্পে ব্যবহৃত হয়।
নাগরিকত্বের বৈধ প্রমাণ কী?

সরকার যে দু’টি নথিকে নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করছে তা হল:
- জন্মের শংসাপত্র – ১৯৬৯ সালের জন্ম ও মৃত্যু আইনে উল্লিখিত, ভারতে জন্মগ্রহণের প্রমাণপত্র।
- স্থায়ী নিবাসের শংসাপত্র – কোনও রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে দীর্ঘদিন বসবাসের নথিপত্র।
এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ভারতীয় নাগরিকত্বের বৈধতা প্রমাণে আরও কঠোর নীতি গ্রহণ করল সরকার। বেআইনি অনুপ্রবেশ ও অবৈধ নাগরিকত্ব দাবির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ হিসেবে এই নিয়ম কার্যকর হচ্ছে বলেই মনে করছে প্রশাসন।