অতীতের মত আর এবার ট্রেনে আত্মীয়-পরিজনদের বিদায় জানাতে স্টেশনে গিয়ে ভিড় করতে হবে না। স্টেশনের অতিরিক্ত ভিড় নিয়ন্ত্রণে আনতে রেল কর্তৃপক্ষ নতুন উদ্যোগ নিয়েছে। করোনার পর প্ল্যাটফর্ম টিকিটের দাম কয়েকগুণ বাড়িয়ে ভিড় কমানোর চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু তা পরীক্ষামূলকভাবে সফল না হওয়ায় এবার একটি নতুন পদ্ধতি চালু করতে যাচ্ছে রেল।

এবার যে সব স্টেশনে দৈনিক ১৫ হাজারের বেশি ‘ফুট ফল’ থাকবে, সেখানে বসানো হবে ‘বুম বেরিয়ার’। রেল বোর্ডের সূত্রে জানা গেছে, প্রথমে কয়েকটি স্টেশনে পরীক্ষামূলকভাবে এই ব্যবস্থা চালু করা হবে। এই নতুন ব্যবস্থায় যাত্রীদের স্টেশনে প্রবেশের জন্য একটি ‘কিউআর কোড’ থাকবে, যা তাদের টিকিটের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। এই কোড ব্যবহার করেই তারা স্টেশনে প্রবেশ করতে পারবেন, ফলে শুধুমাত্র টিকিটধারী যাত্রীরা প্রবেশের সুযোগ পাবেন।
দেশের ৩৯টি বড় স্টেশন ইতিমধ্যে এই পদ্ধতি গ্রহণের জন্য নির্বাচিত হয়েছে, যার মধ্যে হাওড়া ও শিয়ালদহ স্টেশনও রয়েছে। হাওড়ার ডিআরএম সঞ্জীব কুমার জানিয়েছেন, এখনও এ বিষয়ে নির্দেশনা ডিভিশনে আসেনি, তবে পাইলট প্রকল্প হিসেবে এটি সফল হলে শীঘ্রই তা বাস্তবায়িত হবে। বর্তমানে পাঞ্জাবের আম্বালা ডিভিশনের মাহালি, চণ্ডীগড় ও আম্বালা স্টেশনে পরীক্ষামূলকভাবে ‘বুম বেরিয়ার’ বসানোর কাজ শুরু হয়েছে।
এই উদ্যোগটি রেলের ‘ওয়ার্ল্ড ক্লাস’ ও ‘অমৃতভারত’ প্রকল্পের আওতায় নেওয়া হয়েছে। প্রথমে কিছু স্টেশনে এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে, এবং যদি তা সফল হয়, তবে পরবর্তীতে দেশের অন্যান্য স্টেশনেও তা বাস্তবায়িত করা হবে।

তবে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কিছু যাত্রীর মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে। তাদের মতে, ভিড় হয়তো কিছুটা কমবে, তবে ট্রেনে আত্মীয়দের বিদায় জানানোর যে আবেগপূর্ণ মুহূর্ত এবং সামাজিক বন্ধন থাকে, তা ম্লান হয়ে যাবে।
তারা মনে করছেন, রেলের এই নতুন পদক্ষেপের ফলে মানুষের অনুভূতি এবং সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
সামগ্রিকভাবে, রেলের এই সিদ্ধান্ত যাত্রীদের জন্য সুবিধাজনক হতে পারে, তবে এর সামাজিক ও মানসিক প্রভাব নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। ভবিষ্যতে এটি কীভাবে কার্যকর হবে, তা সময়ই বলবে।