ডিম এবং মুরগি (Egg and Chicken) আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকার অপরিহার্য দুটি উপাদান। তবে হঠাৎ যদি শোনা যায়, এগুলি আর পাওয়া যাবে না, তাহলে কী হতে পারে? এমনই শঙ্কা তৈরি হয়েছে বাংলাদেশে, কারণ আগামী ১লা মে থেকে দেশব্যাপী বন্ধ হতে চলেছে ডিম এবং মুরগি উৎপাদন। এই সিদ্ধান্তের ফলে সাধারণ মানুষ এবং পোল্ট্রি খামার মালিকদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
কেন এমন সিদ্ধান্ত?

বাংলাদেশের পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন সম্প্রতি জানিয়েছে যে, দেশের লক্ষাধিক প্রান্তিক খামার বর্তমানে ক্ষতির সম্মুখীন। চাহিদা থাকা সত্ত্বেও বাজারে সিন্ডিকেটের দাপট দিনের পর দিন বাড়ছে।
এতে, বিশেষ করে ইদ ও রোজা মৌসুমে খামার মালিকরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ছেন। হিসাব অনুযায়ী, গত দুই মাসে শুধুমাত্র ডিম এবং মুরগি উৎপাদন খাতে ১২৬০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
কীভাবে ক্ষতি হচ্ছে?
সূত্রের খবর অনুযায়ী, রোজা ও ঈদের সময় প্রান্তিক খামারের মালিকরা প্রতিদিন প্রায় ২০ লাখ কেজি মুরগি বাজারে সরবরাহ করছেন। তবে, প্রতি কেজিতে ৩০ টাকা করে লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের। শুধু মুরগির ব্যবসায় এক মাসের ক্ষতির পরিমাণ ৯০০ কোটি টাকা।
অন্যদিকে, প্রতিদিন ৩ কোটি ডিম উৎপাদিত হচ্ছে, কিন্তু প্রতিটি ডিমে ২ টাকা করে লোকসান হচ্ছে খামার মালিকদের। দুই মাসে, এই লোকসান প্রায় ৩৬০ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।
খামার মালিকদের হাহাকার এবং সরকারের নীরবতা
এই বিশাল ক্ষতির ভার আর বইতে না পেরে পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন ঘোষণা করেছে যে, ১লা মে থেকে তারা আর ডিম এবং মুরগির উৎপাদন করবে না। এর ফলে, বাংলাদেশের খাদ্য ব্যবস্থায় একটি বড় সংকট তৈরি হতে পারে।

অভিযোগ উঠেছে যে, একাধিক প্রভাবশালী গ্রুপ এবং সিন্ডিকেট বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে, যার ফলে খামার মালিকরা উৎপাদন খরচ মেটাতে পারছেন না। অথচ সরকার এখনও এই পরিস্থিতি নিয়ে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
বাংলাদেশের খাদ্য ব্যবস্থার ওপর এই সিদ্ধান্তের প্রভাব
যদি ১লা মে থেকে ডিম এবং মুরগি উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে তা দেশের খাদ্য ব্যবস্থায় এক বিরাট সংকট সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে, গরিব এবং নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য ডিম এবং মুরগি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিনের উৎস। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে বাংলাদেশ সরকারের কতটা কার্যকর পদক্ষেপ নেবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
বাংলাদেশে পোল্ট্রি শিল্পে এই বড়সড় বিপর্যয় দেশের সাধারণ মানুষের খাদ্য চাহিদা পূরণে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে, যা সরকারের দ্রুত পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা তৈরি করেছে।