যখন ভারতের সশস্ত্র বাহিনী পাক অধিকৃত কাশ্মীর ও সীমান্তবর্তী জঙ্গি ঘাঁটিগুলিতে চালাচ্ছে ‘অপারেশন সিঁদুর’, ঠিক তখনই এক নজরকাড়া সাফল্য তুলে ধরল ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো (ISRO)। এক অনন্য কীর্তিতে এবার ভারতের দু’টি স্যাটেলাইট মহাকাশে দেখাল অবিশ্বাস্য দক্ষতা—ডগফাইট! বিশ্বে হাতে গোনা কয়েকটি দেশের তালিকায় এবার যুক্ত হল ভারতের নামও।
মহাকাশে ডগফাইট! শব্দটা শুনলেই যুদ্ধবিমানের কথা মনে পড়বে

ডগফাইট—আকাশে যুদ্ধবিমানগুলির খেলার মতো কসরত—এই শব্দটা এবার ব্যবহার করা হচ্ছে স্যাটেলাইটের ক্ষেত্রেও। বিষয়টা যতটা রোমাঞ্চকর, ঠিক ততটাই জটিল। নিয়ন্ত্রিত উপায়ে মহাকাশে দুটি স্যাটেলাইট পরস্পরের খুব কাছে গিয়েও সংঘর্ষ না ঘটিয়ে একে অপরের চারপাশে ঘোরাফেরা করে, গতি পরিবর্তন করে। এতে বোঝা যায়, সংশ্লিষ্ট দেশের মহাকাশ নিয়ন্ত্রণ কতটা নিখুঁত এবং প্রযুক্তিগতভাবে পরিপক্ব।
২৯,০০০ কিমি প্রতি ঘণ্টায় ISRO-র স্যাটেলাইট কসরত
ISRO-র দুটি স্যাটেলাইট—SDX-01 ও SDX-02, স্পেডএক্স (SPADEX) মিশনের অংশ হিসেবে প্রায় ৫০০ কিমি উচ্চতায় এই ডগফাইট চালায়। ওই সময় তাদের গতি ছিল ঘণ্টায় প্রায় ২৯,০০০ কিমি! আগে এই কীর্তি করেছিল চিন। মার্চ মাসে চিনা স্যাটেলাইটের এমন ডেমো দেখে আমেরিকা একে আখ্যা দিয়েছিল ‘মহাকাশ যুদ্ধাভ্যাস’ হিসেবে। এবার সেই একই কীর্তিতে নজর কাড়ল ভারতও।
উদ্দেশ্য ছিল প্রযুক্তি যাচাই, ফলাফল চমকে দেওয়ার মতো

মূলত, মিশনের বাকি থাকা জ্বালানি কাজে লাগিয়ে এই ডগফাইটের পরীক্ষাটি করে ইসরো। এর লক্ষ্য ছিল—ডকিং, রি-ফুয়েলিং ও আত্মরক্ষার ক্ষমতা যাচাই করা। এর মাধ্যমে জানা যায়, ভবিষ্যতে এই স্যাটেলাইটগুলো কতটা কার্যকর হতে পারে বিপদের সময়ে বা অন্য কোনও মহাকাশ মিশনে এবং সবচেয়ে বড় কথা, ইসরো সফলভাবে প্রমাণ করল যে, তারা এখন কক্ষপথে কার্যত নিখুঁত নিয়ন্ত্রণ রাখতে সক্ষম।
বিশ্বের হাতেগোনা দেশের তালিকায় ISRO
এই ধরনের প্রযুক্তি বিশ্বে এখনো হাতে গোনা কয়েকটি দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ—যেমন আমেরিকা, রাশিয়া, চিন। এবার ভারতের নামও সেই তালিকায় সংযোজিত হল। ভারতের মহাকাশ কার্যক্রমে এটি এক নতুন মাইলফলক।
‘অপারেশন সিঁদুর’ এবং মহাকাশে নজরদারি—দুই দিকেই কড়া বার্তা
যখন ভারত মাটিতে সন্ত্রাসের ঘাঁটি উপড়ে ফেলছে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মাধ্যমে, ঠিক তখনই মহাকাশেও ভারত দেখাল নিয়ন্ত্রণ এবং আধিপত্য। জানা যাচ্ছে, এই সাফল্যের পরই পরিকল্পনা শুরু হয়েছে ‘সিঁদুর ২.০’ অপারেশনের, ফলে, একদিকে পাকিস্তান উদ্বিগ্ন, অন্যদিকে চিন মহাকাশে ভারতের প্রযুক্তিগত অগ্রগতিতে শঙ্কিত।
সিনেমার থেকেও কম খরচে স্যাটেলাইট পাঠানোর দক্ষতায় বিশ্বজুড়ে খ্যাত ইসরো এবার নিজের অস্তিত্ব জানান দিল অন্য মাত্রায়। শুধু চন্দ্রযান-৩ কিংবা আদিত্য এল-১ নয়, মহাকাশে নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতায়ও ভারতের নাম এখন প্রথম সারিতে।