একসময় যে প্রাণী ইতিহাসের পাতায় হারিয়ে গিয়েছিল, আজ তা আধুনিক বিজ্ঞানের ছোঁয়ায় ফিরে এল জীবন্ত রূপে। ১২,৫০০ বছর আগে বিলুপ্ত হওয়া ডায়ার উলফ আজ আবারও পৃথিবীর বুকে!
ইতিহাসে হারিয়ে যাওয়া প্রাণির নতুন জন্ম
প্রাচীন যুগে উত্তর আমেরিকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে রাজত্ব করত এক ভয়ংকর ও শক্তিশালী প্রাণি—ডায়ার উলফ। অনেকটা গ্রে উলফ বা ধূসর নেকড়ের মতো দেখতে হলেও, আকারে বড়, বেশি শক্তিশালী এবং আগ্রাসী ছিল এই প্রজাতিটি।

প্রায় ১২,৫০০ বছর আগে কোনো এক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে পৃথিবী থেকে হারিয়ে যায় এই দুর্ধর্ষ শিকারি। তখন থেকেই তাদের অস্তিত্ব সীমাবদ্ধ ছিল শুধুমাত্র জীবাশ্মে, গবেষণাগারে রাখা কঙ্কালে, আর ইতিহাসের পাতায়।
আধুনিক বিজ্ঞান ফিরিয়ে আনল হারিয়ে যাওয়া ইতিহাস
আজকের দিনে, ক্লোনিং ও জিন এডিটিং-এর যুগান্তকারী প্রযুক্তির মাধ্যমে, সেই ডায়ার উলফ-ই আবার ফিরল জীবন্ত রূপে!
টেক্সাসের কোলোসাল বায়োসায়েন্সেস সংস্থার বিজ্ঞানীরা এই অসাধারণ কৃতিত্বের দাবিদার। তারা জীবাশ্ম থেকে প্রাপ্ত ডিএনএ বিশ্লেষণ করে, আধুনিক গ্রে উলফ-এর ডিএনএর সঙ্গে মিলিয়ে ডায়ার উলফের জেনেটিক কাঠামো পুনর্গঠন করেন। তারপর ক্লোনিং-এর মাধ্যমে জন্ম দেয় দুইটি সুস্থ ডায়ার উলফ শাবকের।
চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না!
মাত্র ৬ মাস বয়সেই এই শাবকদুটির ওজন ৩৬ কেজি ছাড়িয়েছে। শরীরজুড়ে ঘন সাদা লোম, তীক্ষ্ণ চাহনি, শক্তিশালী পেশি—এ যেন একেবারে প্রাগৈতিহাসিক যুগের প্রাণি ফিরে এসেছে বর্তমানের আলোতে।
তারা দিব্যি খেলে বেড়াচ্ছে, খাচ্ছে, বড় হচ্ছে—একেবারে স্বাভাবিক নেকড়ের মতো।
এই গবেষণা প্রমাণ করে দিল—বিজ্ঞান শুধু ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে চলে না, বরং ইতিহাসকেও ফিরিয়ে আনতে পারে।
ডায়ার উলফের এই সফল ক্লোনিং ভবিষ্যতে উলঙ্গ ম্যামথ, ডোডো, কিংবা আরও বহু বিলুপ্ত প্রজাতিকে ফিরিয়ে আনার নতুন আশার আলো দেখাল।

বিলুপ্ত প্রাণিদের ফিরিয়ে আনার এই কৃতিত্ব নিঃসন্দেহে বিজ্ঞানের ইতিহাসে এক নতুন মাইলফলক। সময়ই বলবে এর ফলাফল কী দাঁড়ায়। তবে আপাতত, ইতিহাস যেন নিজের চোখে দেখা গেল—সাড়ে বারো হাজার বছর আগের প্রভু আবার ফিরল পৃথিবীর বুকে।
আপনার কী মত? আপনি কি চান ভবিষ্যতে আরও বিলুপ্ত প্রাণি ফিরে আসুক? মন্তব্যে জানাতে ভুলবেন না!