চেক রিপাবলিকের পূর্বাঞ্চলে পডক্রকোনোসি পর্বতের পাদদেশে সম্প্রতি আবিষ্কৃত হল এক অভূতপূর্ব গুপ্তধন, যা যেন কল্পনার থেকেও বেশি রোমাঞ্চকর। দুই তরুণ অভিযাত্রী পাহাড়ে হাইকিং করতে গিয়ে আকস্মিক ভাবেই বনের প্রান্তে খুঁজে পান এই ধনভান্ডার। উদ্ধার হওয়া সম্পদের পরিমাণ শুনলে যে কারও চোখ কপালে উঠবে—প্রায় ২ কোটি ৮৭ লক্ষ টাকার সমমূল্যের সম্পদ।
কী মিলল সেই গুপ্তধনে?

উদ্ধার হওয়া সম্পদের মধ্যে ছিল ৫৯৮টি সোনার মুদ্রা, কিছু গয়না এবং একটি পুরনো তামাকের ব্যাগ। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মুদ্রাগুলি ১৯ শতকের গোড়ার দিকে তৈরি হয়েছিল এবং সম্ভবত ১৯২১ সালের পরবর্তী কোনও সময়ে মাটির নিচে পুঁতে রাখা হয়েছিল, বিশেষ কোনও কারণবশত।
চমক আরও আছে। ঐ গুপ্তধনে পাওয়া গিয়েছে ফ্রান্স, বেলজিয়াম, অটোমান সাম্রাজ্য এবং প্রাচীন অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি সাম্রাজ্যের মুদ্রা। মুদ্রাগুলির গায়ে থাকা ক্ষুদ্র চিহ্ন বিশ্লেষণ করে প্রত্নতত্ত্ববিদ মিরোস্লাভ নোভাক জানিয়েছেন, সেগুলি প্রাক্তন যুগোস্লাভিয়ায় ব্যবহারের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছিল।
গুপ্তধনের সঙ্গে নাৎসি যোগ?
এই অমূল্য ধনসম্পদ কোথা থেকে এল, তা নিয়ে ইতিমধ্যে গবেষণা শুরু হয়েছে। কিছু বিশেষজ্ঞের ধারণা, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসি বাহিনী যখন রাশিয়ার সৈন্যদের হাতে পরাজিত হয়ে পিছু হটছিল, তখন তারা এই ধনসম্পদ পাহাড়ের গুহায় লুকিয়ে রেখে যায়।

ফেব্রুয়ারি মাসে এই গুপ্তধনের সন্ধান পান দুই তরুণ অভিযাত্রী। তবে এই আবিষ্কারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়েছে গত সপ্তাহে, এবং তা পূর্ব বোহেমিয়ার জাদুঘর প্রকাশ্যে স্বীকার করেছে।
আবিষ্কারকদের পুরস্কার :
চেক রিপাবলিকের আইন অনুযায়ী, যারা এই গুপ্তধনের সন্ধান দিয়েছেন, তাঁরা মোট সম্পদের প্রায় ১০ শতাংশ পাওয়ার অধিকারী হবেন। এ যেন ভাগ্যের খেলা!
এই ঘটনাটি একদিকে যেমন রোমাঞ্চে ভরপুর, তেমনই ইতিহাস, প্রত্নতত্ত্ব এবং যুদ্ধের জটিল রাজনীতিরও এক নিদর্শন। কে জানে, পৃথিবীর কোন পাহাড়, গুহা বা বনভূমির নিচে এখনও কত অজানা ঐশ্বর্য লুকিয়ে রয়েছে!