শিয়ালদহ রেল বিভাগের উদ্যোগে পরিচ্ছন্নতার অভিযানে চমকপ্রদ সাফল্য। শুধুমাত্র থুতু ফেলার অভিযোগে এক মাসে ৭ লক্ষ টাকারও বেশি জরিমানা আদায় করল রেল। গুটখা-পান মশলার দাগে লাল হয়ে থাকা রেল চত্বর ফেরাতে এবার কড়া অবস্থান নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
শিয়ালদহ ডিভিশনের অধীন বিভিন্ন স্টেশনে গুটখা, পান মশলা খেয়ে যত্রতত্র থুতু ফেলা যেন ‘চিরচেনা’ দৃশ্য হয়ে উঠেছিল। সেই দৃশ্য বদলাতেই রেল প্রশাসনের বিশেষ অভিযান। এপ্রিল মাসজুড়ে চলা অভিযানে ধরা পড়েছেন মোট ৬,১৯৩ জন। প্রত্যেককে গুনতে হয়েছে জরিমানা। জরিমানার পরিমাণ? প্রায় ৭ লক্ষ ৬১ হাজার টাকা!
নাগরিক অভ্যেসে বদল আনার লড়াই :

শিয়ালদহের বিভাগীয় রেল ম্যানেজার রাজীব সাক্সেনা স্পষ্ট জানিয়েছেন, “এক মাসে এতগুলি থুতু ফেলার ঘটনা ধরা পড়া হতাশাজনক। এটি প্রমাণ করে আমাদের মধ্যে এখনও সচেতনতার ঘাটতি আছে। তাই কঠোর ব্যবস্থা ছাড়া উপায় নেই।” তিনি আরও জানান, রেলের তরফে স্টেশন চত্বরে যাত্রীদের জন্য বাড়তি সুযোগ-সুবিধা চালু করা হলেও, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা যাত্রীদের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে।
শুধু স্টেশন নয়, এবার নজর থাকবে চলন্ত ট্রেনেও। শিয়ালদহের সিনিয়র ডিসিএম যশরাম মীনা জানিয়েছেন, এবার গুটখা খেয়ে ট্রেনের জানলা বা দরজা দিয়ে থুতু ফেললে, সাদা পোশাকের কর্মীরা তাকে ধরে জরিমানা করবেন। টিকিট পরীক্ষকদের (TTE) হাতে এই আইন প্রয়োগের ক্ষমতা থাকায়, যাত্রীদের সতর্ক করা হয়েছে।
জনসচেতনতার অভাবেই বাড়ছে সমস্যা :

একদিকে ঝাঁ চকচকে স্টেশন, অন্যদিকে গুটখার দাগ—এই অসংগতির অবসানেই জোর রেলের। এই অভিযান প্রমাণ করছে, কঠোর নজরদারি ও আইন প্রয়োগের মাধ্যমেই বদল আনা সম্ভব নাগরিক অভ্যেসে। রেল কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের উদ্দেশে আহ্বান জানিয়েছেন, স্টেশন বা ট্রেনকে নোংরা না করে পরিচ্ছন্ন রাখতে সক্রিয় ভূমিকা নিন।
শুধু জরিমানা আদায় নয়, এই পদক্ষেপ শহরের অভ্যেসে শৃঙ্খলা ফেরানোর চেষ্টা। শিয়ালদহ ডিভিশনের এই উদ্যোগ হয়তো অন্যান্য রেল বিভাগের কাছেও দৃষ্টান্ত হয়ে উঠবে। আর রেলযাত্রীদের পক্ষেও সময় এসেছে, অভ্যেসে বদল আনার। পরিচ্ছন্নতা যে সভ্যতার প্রাথমিক শর্ত—তা মনে রাখলেই শহর আরও সুন্দর হবে।