বয়স শুধুই একটি সংখ্যা—এ কথা আরও একবার প্রমাণ করে দিলেন নাটোরের দিঘাপতিয়ার ৭৫ বছর বয়সী কৃষক সাদেক আলী। ১৯৭৪ সালে এসএসসি ও ১৯৭৬ সালে এইচএসসি পাশ করেও আর্থিক সংকটে থেমে গিয়েছিল তাঁর শিক্ষাজীবন। কিন্তু থেমে থাকেনি স্বপ্ন! অবশেষে ২০২৫ সালে এসে সেই বহু কাঙ্ক্ষিত স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করে তাক লাগিয়ে দিলেন সবাইকে।
সাদেক আলী এখন শুধু একজন কৃষক নন, তিনি এখন একজন স্নাতক ডিগ্রিধারী শিক্ষিত মানুষ—যার গল্পে আজ উদ্বেলিত তাঁর পুরো এলাকা।
ভাঙা পা নিয়েও পরীক্ষা!
২০২২ সালে স্নাতক পরীক্ষার সময় ঘটে দুর্ঘটনা—ভেঙে যায় সাদেক আলীর পা। কিন্তু স্নাতক হওয়ার আকাঙ্ক্ষা এতটাই দৃঢ় ছিল যে, ভাঙা পা নিয়েই তিনি বসেন পরীক্ষায়! এই অনন্য অধ্যবসায়ের গল্পে এখন মুগ্ধ সারা নাটোর।
ছেলের অনুপ্রেরণাতেই শুরু হয় দ্বিতীয় ইনিংস :

সাদেক আলী জানান, বহু বছর আগে ছেলেকে বলেছিলেন, আর্থিক সংকটে তিনি গ্রাজুয়েশন করতে পারেননি। সেই কথা মনে রেখেই তাঁর ছেলে তাঁকে ভর্তি করিয়ে দেন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দিঘাপতিয়া এম কে কলেজে।
২০২০ সালে শুরু হয় যাত্রা, আর ২০২২ সালে তিনি সফলভাবে পাস করে আজ এলাকার অভিনন্দন আর ভালোবাসার মুখোমুখি। গ্রামের মানুষ আনন্দে মিষ্টি বিতরণ করেছেন তাঁর এই কৃতিত্বে।
স্বপ্নের কোনো বয়স নেই :
সাদেক আলীর এই অর্জন শুধু ব্যক্তিগত নয়, এটি একটি বার্তা—”ইচ্ছা থাকলে পথ হয়”। বয়সের তোয়াক্কা না করে তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন, শিক্ষার কোনো বয়স হয় না, আর স্বপ্নেরও মেয়াদ ফুরায় না।
এই অনুপ্রেরণামূলক গল্প যেন দেশের প্রতিটি মানুষের মনে জাগিয়ে তোলে নতুন আশার আলো।