আগ্রার তাজমহল চিরকালই ভালোবাসার শাশ্বত প্রতীক হয়ে রয়েছে, যা মুঘল সম্রাট শাহজাহানের অমর প্রেমের নিদর্শন। কিন্তু বর্তমানে মধ্যপ্রদেশের বুরহানপুরও সাক্ষী হলো এমনই এক অনন্য ভালোবাসার। এখানেও তৈরি হয়েছে হুবহু তাজমহলের আদলে এক মর্মর প্রাসাদ, যা এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
এই অসাধারণ স্থাপত্যকর্মটি কেবল একটি বাড়ি নয়, এটি এক আধুনিক শাহজাহানের স্ত্রীর প্রতি গভীর ভালোবাসার জীবন্ত প্রতিচ্ছবি।
বুরহানপুরের এই চমকপ্রদ বাড়িটির নির্মাতা আনন্দ প্রকাশ চৌকসে, যিনি নিজেও বুরহানপুরে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন। অবাক করার বিষয় হলো, এই তাজমহল-অনুপ্রাণিত প্রাসাদটি নির্মিত হয়েছে তাঁর স্কুল ক্যাম্পাসের মধ্যেই।
এই সম্পূর্ণ বাড়িটি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়েছে রাজস্থানের বিখ্যাত মকরানা মার্বেল, যা আসল আগ্রার তাজমহল নির্মাণেও ব্যবহার করা হয়েছিল। যদিও বাড়িটির আকার মূল তাজমহলের এক-তৃতীয়াংশ, তবুও এর নির্মাণশৈলী যেকোনো স্থাপত্যপ্রেমীকে মুগ্ধ করবে।
অপূর্ব গম্বুজ, সুক্ষ্ম খোদাই করা পিলার এবং মনোরম নকশার দরজাগুলি যেন মুঘল আমলের শিল্পকলার এক পুনর্জন্ম ঘটিয়েছে।
সম্প্রতি একটি ভাইরাল ভিডিওতে প্রিয়ম সরস্বত নামের এক ব্যক্তি এই দম্পতির সাথে কথা বলেছেন।
ভিডিওতে তাঁদের প্রশ্ন করা হয়, “এই বাড়ি কি সত্যিই তাজমহলের অনুকরণে তৈরি?” স্মিত হেসে তাঁরা উত্তর দেন, “হ্যাঁ, একদম। এটা পুরোপুরি আমার স্ত্রীকে উৎসর্গ করা। আমাদের ভালোবাসা আজও অটুট।” এই সহজ স্বীকারোক্তি তাদের গভীর ভালোবাসাকেই প্রতিফলিত করে।

মূল তাজমহলের যে মিটার মাপে নির্মিত হয়েছিল, সেই মাপগুলি এখানে ফুটে রূপান্তরিত করে নিখুঁতভাবে ব্যবহার করা হয়েছে।
সরস্বতের ক্যাপশনে বাড়ির বর্এণনা হিসেবে লিখেছেন, “ইন্দোরের কাছে এই অসাধারণ বাড়িটি শুধু স্থাপত্য নয়, এই যুগের ভালোবাসার এক প্রতীক” এবং সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, “এটি একটি স্কুল ক্যাম্পাসের মধ্যেই তৈরি।”
ভিডিওটি ইতিমধ্যেই ৫.৯ মিলিয়ন ভিউ ছাড়িয়ে গেছে, আর কমেন্ট বক্স উপচে পড়ছে আবেগ আর মুগ্ধতায়। একজন লিখেছেন, “এটা এই বছর আমার দেখা সবচেয়ে রোম্যান্টিক জিনিস।” আরেকজন মন্তব্য করেছেন, “ভালোবাসার প্রকৃত প্রকাশ তো এভাবেই হয় – শুধু কথায় নয়, কাজে ও কিছু গড়ে তোলার মধ্যে দিয়ে।”
আরও মন্তব্য এসেছে, যা বলছে, “এটা শুধু বাড়ি নয়, যেন মার্বেলে লেখা এক জীবন্ত কবিতা।” আবার কেউ মন্তব্য করেছেন, “স্কুল ক্যাম্পাসে ছোট তাজমহল নিয়ে বড় হওয়া? যেন রূপকথা!”
বুরহানপুরের এই ‘তাজমহল’ প্রমাণ করে যে, ভালোবাসার কোনো নির্দিষ্ট সংজ্ঞা নেই, এটি বিভিন্ন রূপে প্রকাশিত হতে পারে। আনন্দ প্রকাশ চৌকসের এই অসাধারণ সৃষ্টি কেবল একটি স্থাপত্যকর্ম নয়, এটি এক দম্পতির অটুট ভালোবাসার অমর গাথা, যা যুগ যুগ ধরে মানুষকে ভালোবাসার গভীরতা স্মরণ করিয়ে দেবে।