দীর্ঘদিনের জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে মহাকাশে এক অভূতপূর্ব দৃশ্যের সাক্ষী হলো মানবজাতি। বিজ্ঞানীরা এতদিন ধরে যে ‘বরফ চক্র’-এর অস্তিত্ব কল্পনা করে আসছিলেন, এবার তার সশরীর প্রমাণ মিলল। নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের পাঠানো তথ্যে ধরা পড়েছে এমন এক দৃশ্য, যা মহাকাশ গবেষণায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
অনেক আগে থেকেই বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল যে, কিছু তারুণ্যময় নক্ষত্রের চারপাশে বরফ জমে থাকা চক্রের অস্তিত্ব থাকতে পারে। এই বরফ ড্রাই আইস (কার্বন ডাই অক্সাইড) নয়, বরং জমাট বাঁধা জলের বরফ। এই ধারণা এতদিন পর্যন্ত কেবল কল্পনাতেই সীমাবদ্ধ ছিল, কোনো বাস্তব প্রমাণ মেলেনি। সেই অপেক্ষারই সমাপ্তি ঘটাল জেমস ওয়েব।
অতি শক্তিশালী এই টেলিস্কোপের পাঠানো ছবি ও তথ্য বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয়েছেন যে, একাধিক তরুণ নক্ষত্রের চারপাশ ঘিরে রয়েছে বরফের কুচিতে ভরা গোলাকার চক্র। এই চক্রগুলিতে জমাট বাঁধা বরফ স্ফটিকের মতো জ্বলজ্বল করছে, যা জল থেকে তৈরি হয়েছে।

বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এই বরফ আগামী দিনে বিশাল আকারের গ্রহ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। শুধু তাই নয়, গ্রহাণু তৈরিতেও এই বরফ কুচির অবদান অনস্বীকার্য। এই বরফই গ্রহ বা গ্রহাণুগুলিকে পাথুরে রূপ ধারণ করতে সাহায্য করে।
এতদিন পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা কেবল অনুমান করে এসেছেন যে তরুণ নক্ষত্রদের চারধারে বরফের চক্র থাকে। কিন্তু এবার তার হাতেনাতে প্রমাণ পেয়ে যাওয়ায় মহাকাশ গবেষণায় নতুন গতি এসেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই আবিষ্কার মহাবিশ্বকে আরও ভালোভাবে চিনতে এবং এর সৃষ্টি রহস্য উন্মোচনে ভবিষ্যতে অনেকটাই সাহায্য করবে।