স্থল, জল ও আকাশের পর এবার মহাশূন্যেও শক্তি প্রদর্শনে নামল ভারত। প্রতিরক্ষা কৌশলে নতুন অধ্যায় লিখল ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO। বিশ্বমঞ্চে মহাকাশে আধিপত্য বিস্তারে একের পর এক নজির গড়ছে ভারত, আর তারই প্রমাণ মিলল সাম্প্রতিক ‘স্যাটেলাইট ডগ ফাইটিং’-এ।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, পৃথিবী থেকে প্রায় ৫,০০০ কিলোমিটার ওপরে ISRO পরিচালিত দুটি উপগ্রহের মধ্যে একটি কৃত্রিম ডগ ফাইটিং অনুশীলন হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চিন ও পাকিস্তানকে কৌশলগত বার্তা দিতেই ভারতের এই উদ্যোগ। বিশেষ করে পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার আবহে এমন অভিযান ভারতীয় প্রতিরক্ষা কৌশলে বড় পদক্ষেপ বলেই মনে করা হচ্ছে।

ডগ ফাইটিং-এর মহাকাশীয় অনুশীলন:
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ISRO-র চেয়ারম্যান ভি নারায়ণন জানান, ‘স্পেড এক্স মিশন’-এর অংশ হিসেবে ডকিং ও আনডকিং প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এই দুটি প্রক্রিয়া শেষে উভয় উপগ্রহেরই প্রায় ৫০ শতাংশ জ্বালানি অবশিষ্ট ছিল। সেই জ্বালানির ব্যবহার করেই চালানো হয় মহাকাশে ডগ ফাইটিং-এর মহড়া।
ISRO-র অধীনে থাকা দুটি উপগ্রহ—SDXO1 ও SDXO2— ঘণ্টায় প্রায় ২৮,০০০ কিমি বেগে একে অপরের কক্ষপথে ঘুরতে ঘুরতে অত্যন্ত কাছাকাছি চলে আসে। সংঘর্ষ না ঘটিয়েই একে অপরের সঙ্গে সংঘাতের সম্ভাবনার ভিতর দিয়ে মহড়াটি সম্পন্ন করা হয়, যা দেখতে অনেকটাই বাস্তব ডগ ফাইটের মতো।
ভারতের প্রযুক্তিগত সাফল্য:
মহাকাশে এমন কাজ অত্যন্ত জটিল ও সূক্ষ্ম হলেও, তা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছে ভারত। এর ফলে বিশ্বের দরবারে ভারতের মহাকাশ প্রযুক্তির অগ্রগতি আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এর মাধ্যমে ভারত শুধু মহাকাশে নিজেদের উপস্থিতি জোরালো করল না, বরং চিন ও পাকিস্তানের মতো প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলিকে কৌশলগতভাবে স্পষ্ট বার্তা পাঠাল। গত মার্চে চিনের কিছু উপগ্রহ গোপনে মহাকাশে সংঘাতমূলক মহড়া চালাচ্ছে বলে শোনা গিয়েছিল। এবার ভারতও সেই পথে হেঁটে প্রমাণ করে দিল—এই যুদ্ধে তারাও সমান প্রস্তুত।
ভারতের এই স্যাটেলাইট ডগ ফাইটিং অভিযান স্পষ্টভাবে দেখিয়ে দিল, মহাকাশ আর শুধু গবেষণার ক্ষেত্র নয়—এখন তা প্রতিরক্ষার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ। আর সেখানে ভারতের তেজ স্পষ্ট, শত্রুরাও কাঁপছে সেই বারুদের ঝলকে।