‘মে’ডে’ বলেই নিঃশেষ! বিমান ভেঙে পড়ার আগে পাইলটের শেষ আকুতি শুনে স্তব্ধ আমেদাবাদ

বিমান ভেঙে পড়ার আগে পাইলটের শেষ আকুতি শুনে স্তব্ধ আমেদাবাদ

আহমেদাবাদের মেঘানি নগরের বিজে মেডিকেল কলেজের ইউজি হোস্টেলের মেসের ছাদে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান ভেঙে পড়ার ঘটনায় স্তম্ভিত গোটা দেশ। ২৪২ জন যাত্রী নিয়ে উড্ডয়ন করা বিমানটি ভেঙে পড়ার মুহূর্তে ভয়াবহ বিস্ফোরণের শিকার হয়, যা সকল আরোহীর মৃত্যুর আশঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছে। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার ঠিক আগে, পাইলটের শেষ আকুতি ছিল আকাশপথে পরিচিত এক বিপদবার্তা – ‘মে’ডে কল’। এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)-এর কাছে পাঠানো সেই জরুরি বার্তা শুনে এটিসি যোগাযোগের চেষ্টা করলেও আর কোনো সংযোগ স্থাপন করা যায়নি। মাত্র ৬ সেকেন্ডের মধ্যেই সব শেষ হয়ে যায়।

‘মে’ডে’ – কেন এই শব্দেই বিপদবার্তা?

বিমান পরিষেবার পরিভাষায়, ‘মে’ডে’ একটি ‘বিপদ সংকেত’। ফরাসি শব্দ ‘মেইডার’ থেকে এই ‘মে’ডে’ শব্দটির উৎপত্তি, যার আক্ষরিক অর্থ হলো ‘আমাকে সাহায্য করুন’। যখন কোনো পাইলট আপৎকালীন পরিস্থিতিতে কোনো বিপদের আঁচ পান, তখন দ্রুত সাহায্যের জন্য এই শব্দটি ব্যবহার করেন। সাধারণত, এটিসি এবং এটিসি-র আওতাধীন বিমানের মধ্যে রেডিও যোগাযোগের মাধ্যমে এই ‘মে’ডে কল’ পাঠানো হয়, যা পেলে দ্রুত সাহায্যের বার্তা পাঠানো হয়। ১৯২০-এর দশকে এই শব্দবন্ধটি প্রথম চালু হয়েছিল এবং বর্তমানে এটি বিশ্বব্যাপী ব্যবহৃত হয়।

‘মে’ডে, মে’ডে, মে’ডে’ – কেন তিনবার উচ্চারণ?

‘মে’ডে’ শব্দটি সর্বদা পরপর তিনবার উচ্চারণ করা হয় – ‘মে’ডে, মে’ডে, মে’ডে’। এর কারণ হলো, কোলাহলপূর্ণ পরিস্থিতি বা নিম্নমানের রেডিও ট্রান্সমিশনের ক্ষেত্রেও এই সংকেত যেন এটিসি স্পষ্ট বুঝতে পারে যে বিমানটি কোনো বিপদে পড়েছে।

'মে'ডে, মে'ডে, মে'ডে' – কেন তিনবার উচ্চারণ?

কখন পাঠানো হয় এই জরুরি বার্তা?

বিভিন্ন গুরুতর পরিস্থিতিতে পাইলটরা ‘মে’ডে কল’ করে থাকেন। এর মধ্যে অন্যতম কিছু কারণ হলো:

  • ইঞ্জিনে গোলযোগ: বিমানের ইঞ্জিনে গুরুতর ত্রুটি দেখা দিলে।
  • দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া: চরম প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যে বিমান আটকে পড়লে।
  • মেডিক্যাল ইমার্জেন্সি: বিমানের মধ্যে কেউ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে।

‘মে’ডে’ পাওয়ার পর এটিসি-র ভূমিকা :

এই বিপদ সংকেত পাওয়ার সাথে সাথে এটিসি সেই ফ্রিকোয়েন্সিতে থাকা সমস্ত ‘রেডিও ট্র্যাফিক’ পরিষ্কার করে দেয়। এরপর বিপদগ্রস্ত পাইলট তাঁর অবস্থান, জরুরি অবস্থার প্রকৃতি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিবরণ এটিসি-র সাথে ভাগ করে নেন। এরপর এটিসি জরুরি পরিষেবার মাধ্যমে সাহায্যের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

অন্যদিকে, পরিস্থিতি যদি ততটা গুরুতর না হয় কিন্তু উদ্বেগের বিষয় থাকে, তখন পাইলটরা ‘প্যান প্যান কল’ করেন।
উল্লেখ্য, শুধুমাত্র আকাশপথের বিমানই নয়, জলপথে যেকোনো জাহাজ থেকেও বিপদের সময় এই ‘মে’ডে কল’ পাঠানো হয়ে থাকে। এটি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতিতে যোগাযোগের একটি অপরিহার্য মাধ্যম।

RIma Sinha

Rima Sinha is a professional journalist and writer with a strong academic background in media and communication. She holds a Bachelor of Arts from Tripura University and a Master’s degree in Journalism and Mass Communication from Chandigarh University. With experience in reporting, feature writing, and digital content creation, Rima focuses on delivering accurate and engaging news stories to Bengali readers. Her commitment to ethical journalism and storytelling makes her a trusted voice in the field.

Recent Posts