সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বড় সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র সরকার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ভারতের সেনা, বায়ুসেনা ও নৌসেনাকে ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দেওয়া হয়েছে—তারা যখন এবং যেখানে প্রয়োজন মনে করবে, তখনই ‘অ্যাকশন’ নিতে পারবে। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এই বার্তা দেওয়া হয়।
সর্বোচ্চ স্তরের নিরাপত্তা বৈঠক

প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে আয়োজিত এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ (সিডিএস) জেনারেল অনিল চৌহান এবং তিন বাহিনীর প্রধান – সেনা প্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী, বায়ুসেনা প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এপি সিং এবং নৌসেনা প্রধান অ্যাডমিরাল দীনেশকুমার ত্রিপাঠী।
প্রধানমন্ত্রী স্পষ্টভাবে জানান, ভারতের প্রতিক্রিয়া কী হবে, কবে ও কীভাবে তা বাস্তবায়িত হবে, তা নির্ধারণ করবে তিন বাহিনী। তাঁদের কৌশলগত স্বাধীনতা থাকবে পুরোপুরি। ভারত এবার বদলা নিতেই চলেছে, আর সেই পদক্ষেপ হবে সুপরিকল্পিত ও শক্তিশালী।
পাকিস্তান জঙ্গি মদতদাতার অভিযোগ
২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় যে হামলা চালানো হয়, তাতে প্রাণ হারান ২৬ জন। তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন পর্যটক। গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, এই হামলার নেপথ্যে রয়েছে পাকিস্তান মদতপুষ্ট জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈবা-র ছায়া সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (TRF)। হামলার পর থেকেই ভারতের কূটনৈতিক মহলে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে কঠোর অবস্থান।
সিন্ধু জলচুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত ছাড়াও নেওয়া হয়েছে আরও কড়া পদক্ষেপ। চলছে জঙ্গি দমন অভিযান।

সংশ্লিষ্ট মহলের আশঙ্কা, এই ঘটনার পর ভারত ফের সার্জিক্যাল স্ট্রাইক অথবা এয়ার স্ট্রাইক চালাতে পারে। ফলে সীমান্তের ওপারে তৈরি হয়েছে প্রবল আতঙ্ক।
হ্যাকড রাজ্য সরকারের শিক্ষা দপ্তরের ওয়েবসাইট
এই ঘটনারই প্রতিক্রিয়ায় রাজস্থানের শিক্ষা বিভাগের ওয়েবসাইট হ্যাকের অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল, ২০২৫) শিক্ষা দপ্তরের হোমপেজে এক ব্যঙ্গাত্মক বার্তা দেখা যায়, যেখানে বর্তমানের ঘটনা উল্লেখ করে ভারতীয় প্রশাসনকে ব্যঙ্গ করা হয়।
পাশাপাশি, পহেলগাঁও হামলা নিয়েও কিছু আপত্তিকর মন্তব্য ছিল ওই বার্তায়। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী মদন দিলওয়ার জানিয়েছেন, ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং সাইবার নিরাপত্তা বিভাগকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে কোনও তথ্য ফাঁসের সম্ভাবনা না থাকলেও সতর্কতা হিসেবে তদন্ত চলছে।
পহেলগাঁও হামলার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই কড়া বার্তা স্পষ্ট করে দিচ্ছে, এবার ভারত চুপ করে বসে থাকবে না। সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় তিন বাহিনীকে দেওয়া ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ ভারতীয় প্রতিরক্ষার নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে বলেই মনে করছে বিশ্লেষক মহল।