ভূমিকম্পের ছদ্মবেশে চলছে পারমাণবিক পরীক্ষা? বিজ্ঞানীরা জানালেন ভয়ংকর সতর্কবার্তা।
ভূমিকম্প নাকি গোপন বিস্ফোরণ?
- সম্প্রতি লস আলামোস ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির ভূকম্পবিদরা এক গবেষণায় তুলে ধরেছেন চাঞ্চল্যকর তথ্য।
- তাদের গবেষণা বলছে, ভূমিকম্পের আড়ালে গোপন পারমাণবিক বিস্ফোরণ লুকিয়ে থাকতে পারে!
- গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে ‘বুলেটিন অব দ্য সিসমোলজিক্যাল সোসাইটি অব আমেরিকা’য়।
বিস্ফোরণ আর ভূমিকম্পের পার্থক্য বোঝাই কঠিন!

গবেষক জোশুয়া কারমাইকেল জানান, ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক বিস্ফোরণের কম্পন আর প্রাকৃতিক ভূমিকম্পের কম্পন প্রায় একরকম। ফলে সাধারণ চোখে বা যন্ত্রে পার্থক্য করা দুঃসাধ্য।
আধুনিক সংকেত বিশ্লেষণ প্রযুক্তি কিছুটা সহায়তা করে ঠিকই, তবে তা যথেষ্ট নয় বলেই স্পষ্ট হয়েছে নতুন গবেষণায়।
ভয়ংকর তথ্য: একসঙ্গে হলে বিভ্রান্ত হয় যন্ত্রও!
গবেষণায় দেখা গেছে, স্বাভাবিক অবস্থায় ১.৭ টনের বিস্ফোরণ ৯৭% সফলতায় ধরা পড়ে। কিন্তু সেই বিস্ফোরণের আশপাশে যদি ১০০ সেকেন্ডের মধ্যে বা ২৫০ কিলোমিটারের মধ্যে ভূমিকম্প ঘটে — তাহলে শনাক্তকরণের হার নেমে আসে মাত্র ৩৭ শতাংশে!
কারমাইকেল জানান,”ভূমিকম্পের ঢেউ আর বিস্ফোরণের সংকেত মিশে গেলে, উন্নত যন্ত্রও বিভ্রান্ত হয়ে যায়।”
আগের ধারণা ভুল প্রমাণিত!
২০১২ সালের এক গবেষণা বলেছিল, ভূমিকম্পের কম্পন নাকি কখনও বিস্ফোরণের সংকেত ঢাকতে পারে না।
কিন্তু কারমাইকেলের এই নতুন গবেষণা সেই ধারণাকে পুরো চ্যালেঞ্জ দিয়েছে!
বিশেষ করে উত্তর কোরিয়ার মতো দেশে, যেখানে গত দুই দশকে ছয়টি পারমাণবিক পরীক্ষা হয়েছে, সেখানে এই গবেষণার তাৎপর্য ভয়াবহ রকমের।
ভূমিকম্পের ঝাঁকেও হারিয়ে যায় সংকেত!

গবেষকরা আরও দেখিয়েছেন, ভূমিকম্পের পরাঘাত বা একটানা কম্পন চলার সময়ও সংকেত গায়েব হতে পারে।
এতে সংকেত শনাক্তকরণের হার ৯২ শতাংশ থেকে কমে যায় মাত্র ১৬ শতাংশে!
কারমাইকেলের সতর্ক বার্তা, “আমরা আসলে বহু ভূকম্পন ঠিকমতো ধরতেই পারি না!”
পারমাণবিক পরীক্ষার গোপন রহস্য উন্মোচনের নতুন চ্যালেঞ্জ
পারমাণবিক বিস্ফোরণ শনাক্ত করা এমনিতেই দুরূহ কাজ, আর যখন প্রাকৃতিক ভূমিকম্পের ভিড়ে সংকেত হারিয়ে যায়, তখন তা আরও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
এই গবেষণা বিজ্ঞানীদের সামনে নতুন করে চিন্তা করার দরজা খুলে দিয়েছে — ভবিষ্যতে ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণেও আসছে বড় পরিবর্তন!