জাতিসংঘের পর মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় সংগঠন, ৫৭-জাতিগোষ্ঠীর অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কোঅপারেশন (OIC)-কে ভারত-বিরোধী প্রচারে পাকিস্তানের পুরোনো কৌশল এবার ব্যর্থ হলো। সম্প্রতি জাকার্তায় অনুষ্ঠিত OIC-এর পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের বৈঠকে পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে একটি প্রস্তাব আনার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তিনটি প্রভাবশালী মুসলিম দেশ— ইন্দোনেশিয়া, বাহরাইন এবং মিশর— তাদের এই প্রচেষ্টাকে রুখে দিয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরেই পাকিস্তান জম্মু ও কাশ্মীর ইস্যু এবং ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়াদি নিয়ে OIC-এর প্ল্যাটফর্মে অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা করে আসছে। পহেলগাঁওয়ে সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার পর ভারতের সঙ্গে সংঘাতের আবহেও ইসলামাবাদ একই পথে হাঁটার চেষ্টা করে। কিন্তু তাদের এই পদক্ষেপ সফল হয়নি।

ইন্দোনেশিয়ার দৃঢ় অবস্থান:
বৈঠকের আয়োজক দেশ হিসেবে ইন্দোনেশিয়া, যা বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম দেশ, পাকিস্তানের ভারত-বিরোধী এজেন্ডা আটকে দেয়। ভারতের সঙ্গে ইন্দোনেশিয়ার সম্পর্ক ক্রমশ গভীর হচ্ছে। এর প্রমাণ মেলে যখন ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি সুবিয়ান্তো ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথি হিসেবে এসেছিলেন। এমনকি দিল্লির অনুরোধে তিনি পাকিস্তান সফরও স্থগিত করেছিলেন। কাশ্মীর ইস্যুতেও ইন্দোনেশিয়া ভারতকে সমর্থন জানিয়েছে এবং পহেলগাঁও হামলার পর সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছে।
বাহরাইন ও মিশরের সমর্থন:

এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইন্দোনেশিয়া ছাড়াও বাহরাইন ও মিশরও পাকিস্তানের ভারত-বিরোধী প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে। গত এক দশকে ভারত এই দুই দেশের সঙ্গেও সম্পর্ক মজবুত করেছে। বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধির পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামেও তাদের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই দেশগুলির সমর্থন ভারতের কূটনৈতিক সাফল্যের এক নতুন দিক উন্মোচন করেছে।
বদলে যাওয়া ভূ-রাজনৈতিক সমীকরণ:
OIC-এর মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্মে ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের প্রস্তাব ব্যর্থ হওয়া এক ভিন্ন ভূ-রাজনৈতিক সমীকরণের ইঙ্গিত দেয়। এটি প্রমাণ করে যে, ভারত মুসলিম বিশ্বের অনেক দেশের সঙ্গেই তাদের সম্পর্ক জোরদার করতে সক্ষম হয়েছে, যা পাকিস্তানের পুরোনো কৌশলকে অকার্যকর করে তুলছে। এই ঘটনা আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের ক্রমবর্ধমান প্রভাব এবং মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে তার গ্রহণযোগ্যতাকে তুলে ধরে।