২ অগাস্ট, ২০২৭ সাল– এই তারিখটি ইতিহাসের পাতায় এক বিশেষ স্থান করে নিতে চলেছে। এই দিনটি সম্ভবত আমাদের প্রজন্মের এমন এক মহাজাগতিক ঘটনার সাক্ষী হবে, যা এরপরে আর কেউ হয়তো দেখতে পাবে না। একটি বিরল এবং দীর্ঘস্থায়ী পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ ঘটতে চলেছে, যা প্রায় ৬ মিনিট ২৩ সেকেন্ড স্থায়ী হবে। দিনের আলো পুরোপুরি অন্ধকারে ঢেকে যাবে, আর এই দৃশ্য পরবর্তী ১০০ বছরের মধ্যে আর দেখা যাবে না।
এই গ্রহণ কেন এত দীর্ঘস্থায়ী?
বেশিরভাগ পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ সাধারণত ৩ মিনিটের কম সময় স্থায়ী হয়। কিন্তু ২ অগাস্টের এই গ্রহণটি অনেক বেশি সময় ধরে চলবে। এর পেছনে রয়েছে তিনটি প্রধান জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক কারণ:
- পৃথিবীর অবস্থান: ২ অগাস্ট, পৃথিবী সূর্য থেকে সবচেয়ে দূরে থাকবে। এই অবস্থাকে অ্যাফেলিয়ন বলা হয়। এর ফলে সূর্যকে তুলনামূলকভাবে ছোট দেখাবে।
- চাঁদের অবস্থান: একই সময়ে, চাঁদ পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে থাকবে। এই কারণে চাঁদকে স্বাভাবিকের চেয়ে বড় দেখাবে।
- বিষুবরেখা বরাবর পথ: চাঁদের ছায়া বিষুবরেখা বরাবর ধীর গতিতে অগ্রসর হবে। এই ধীর গতি এবং দীর্ঘ পথই গ্রহণকে দীর্ঘস্থায়ী হতে সাহায্য করবে।
উল্লেখ্য কারণের সংমিশ্রণেই আমরা এক ব্যতিক্রমী এবং দীর্ঘস্থায়ী সূর্যগ্রহণের সাক্ষী হতে চলেছি।
এই মহাজাগতিক দৃশ্য কোথায় দেখা যাবে?

এই সূর্যগ্রহণটি ২ অগাস্ট আটলান্টিক মহাসাগর থেকে শুরু হবে। এরপর এটি জিব্রাল্টার প্রণালী, দক্ষিণ স্পেন, এবং উত্তর আফ্রিকা হয়ে আরব উপদ্বীপের দিকে যাবে। সৌদি আরবের জেদ্দা এবং মক্কার মতো শহরগুলোও এর ছায়ার পথে থাকবে।
এরপর গ্রহণটি ভারত মহাসাগরে শেষ হবে। ইয়েমেন এবং সোমালিয়ার কিছু অংশেও আংশিকভাবে এটি দেখা যাবে। এই দীর্ঘ অন্ধকার এবং সূর্যের চারপাশে আলোকিত বলয়-এর দৃশ্য সত্যিই ভোলার মতো হবে না। এটি জ্যোতির্বিজ্ঞান প্রেমীদের জন্য এক বিশাল সুযোগ, যা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য এক দীর্ঘ অপেক্ষার পর আসবে।
যদি আপনি এই সময় এই অঞ্চলের আশেপাশে থাকেন, তবে অবশ্যই সুরক্ষার ব্যবস্থা নিয়ে এই দুর্লভ দৃশ্যটি উপভোগ করতে পারেন। মনে রাখবেন, সরাসরি সূর্যের দিকে তাকানো চোখের জন্য ক্ষতিকর, তাই অবশ্যই সঠিক সোলার ফিল্টার বা গ্রহণ দেখার চশমা ব্যবহার করুন।