লেবু আপেল এবং কলার চেয়েও স্বাস্থ্যকর ফল। উইলিয়াম প্যাটারসন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা দেখেছে যে, লেবু সব ফলের মধ্যে পুষ্টিগুণে সেরা। ভিটামিন সি, ফাইবার, এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত লেবু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, হজম করতে সাহায্য করে, এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। যদিও লাইম ভালো, তবে লেবুতে বেশি ফ্লেভোনয়েড থাকে। লেবুর খোসায় উপকারী তেলও থাকে।
সকলেরই জানা আছে যে, প্রতিদিন একটি আপেল খেলে ডাক্তারের কাছে যেতে হয় না। পাশাপাশি, কলাও পুষ্টিতে কম নয়। এটি পটাসিয়াম, ফাইবার, ভিটামিন সি ও ভিটামিন বি-৬ সমৃদ্ধ, আর প্রায় সব খাবারের সাথে মিলিয়ে খাওয়া যায়। তাছাড়া, গবেষণা দেখাচ্ছে যে, আপেল আর কলার থেকে একধাপ এগিয়ে রয়েছে লেবু, যা সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর ফল হিসেবে স্বীকৃত।
সাইট্রাসের সেরা প্রতিনিধি হল লেবু :
গবেষকরা বিভিন্ন ফলের পুষ্টিগুণ যাচাই করার সময় শুধু স্বাদ দেখেন নি , বরং সবচেয়ে পুষ্টিগুণী ফল এর বিষয়েও চিন্তা করেছে। উইলিয়াম প্যাটারসন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুসন্ধান দলটি ৪১ প্রকার ফলের পরিমাণ যাচাই করে দেখেছে যে লেবুতে অত্যন্ত ভিটামিন সি, শক্তিশালী ফ্ল্যাভনয়েড, সোলিউবল ফাইবার এবং পাইটোকেমিক্যালস রয়েছে, যা শরীরের সামগ্রিক সুস্থতা উন্নত করতে সাহায্য করে।
লেবু আপনার রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, হজম ভালো করে, হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় এবং শরীরকে সুস্থ রাখে। যদিও লেবু অ্যাসিডিক (তাই টক), শরীরে এটি অ্যালকালাইজিং প্রভাব ফেলে, অর্থাৎ শরীরের পিএইচ ব্যালান্স করে ও পেটের স্বাস্থ্য রক্ষা করে।
লেবুর সলিউবল ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং ভালো ব্যাকটেরিয়াকে খাদ্য দেয়। ফ্ল্যাভোনয়েড রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে, যা হৃদরোগ থেকে রক্ষা করে। লাইম ও ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ। তবে গবেষকরা বলছেন, লেবুতে ফ্ল্যাভোনয়েডের পরিমাণ বেশি থাকায় এটি আরও উপকারী। এছাড়া, লেবুর খোসা মোটা এবং এতে থাকে লিমোনিন নামের তেল, যা জীবাণুনাশক এবং সম্ভবত ক্যান্সার বিরোধী গুণও রাখে। তাই লেবুর খোসা ফেলে না দিয়ে রান্নায় ব্যবহার করুন।
লেবুর সরাসরি টুকরো কাটা পছন্দ না হলে চিন্তা নেই, অনেক সহজ উপায় আছে—
- গরম জলে লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন। এর স্বাদ বৃদ্ধি করার জন্য মধু যোগ করতে পারেন।
- স্যুপ বা সালাদে লেবুর রস যোগ করলে স্বাদ ও পুষ্টি বাড়বে।
- আপনার প্রিয় খাবারে লেবুর খোসা ঘষে দিতে পারেন, যা স্বাদে বৈচিত্র্য আনে এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যোগ করে।
তবে খালি পেটে সরাসরি লেবুর রস না খেতে ভালো, কারণ এটি দাঁতের এনামেল ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং পেটেও সমস্যা করতে পারে। তাই সবসময় পানি দিয়ে পাতলা করে নিন, আর যদি হজমে সমস্যা থাকে তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। লেবু এখন শুধু রান্নার উপকরণ নয়, বরং দৈনন্দিন স্বাস্থ্য রক্ষার এক গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। তাই প্রতিদিন লেবু খান, সুস্থ থাকুন।