বৃষ্টির দিনে গরম চায়ের সাথে মচমচে শিঙাড়া কিংবা মিষ্টি জিলিপির স্বাদ – বাঙালির অতি প্রিয় এই খাবারগুলো স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ক্ষতিকারক, তা জেনে হয়তো আপনার চোখ কপালে উঠবে।
সম্প্রতি, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এই জনপ্রিয় খাবারগুলো নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা জারি করেছে। এমনকি, সিগারেটের মতোই ক্ষতিকারক আখ্যা দেওয়া হয়েছে শিঙাড়াকে।
কোন কোন খাবার নিয়ে সতর্ক করল কেন্দ্রীয় সরকার?
স্বাস্থ্য মন্ত্রক সমস্ত কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য এক নতুন ফরমান জারি করেছে। এবার থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ক্যান্টিনগুলিকে ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জিলিপি-শিঙাড়া খাওয়ার বিষয়ে সতর্ক করতে হবে। শুধু এই দুটি খাবারই নয়, সতর্কতার তালিকায় আরও আছে:
- লাড্ডু
- বড়া পাও
- পকোড়া
এইসব খাবারের ক্যালোরি এবং চিনির পরিমাণ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে ক্যান্টিনগুলিতে পোস্টার লাগাতে হবে। নাগপুরের এইমস (AIIMS) ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের এই নতুন নিয়মটি নিজেদের ক্যাম্পাসে চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে।
কেন এই সতর্কতা?

ভারতীয়দের মধ্যে স্থূলতা বা ওবেসিটির সমস্যা ক্রমেই বাড়ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি পাঁচজন শহরবাসীর মধ্যে একজন ইতিমধ্যেই স্থূলতার শিকার। যদি এই প্রবণতা চলতে থাকে, তাহলে ২০৫০ সালের মধ্যে প্রায় ৪৪.৯ কোটি ভারতীয় স্থূলত্বে আক্রান্ত হবেন। এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি রুখতেই কেন্দ্রীয় সরকার এই নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সরকার যদিও এই খাবারগুলির বিক্রির উপর কোনো রকম নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি, তবে মূল উদ্দেশ্য হলো জনসচেতনতা বৃদ্ধি। চিনি এবং ট্রান্সফ্যাট, যা শিঙাড়া-জিলিপির মতো মুখরোচক খাবারে থাকে, তা যে তামাকের মতোই শরীরের সমান ক্ষতি করছে, সেই বিষয়ে মানুষকে সতর্ক করা হচ্ছে। মানুষ খাওয়ার আগে যেন জানতে পারেন, তাঁরা ঠিক কী খাচ্ছেন – এই সচেতনতা তৈরি করার জন্যই এই উদ্যোগ। ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন এবং হৃদরোগ প্রতিরোধের জন্য এই সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি।
তাই এখন থেকে আপনার প্রিয় শিঙাড়া বা জিলিপির স্বাদ নেওয়ার আগে একবার ভাবুন, কতটা ক্যালোরি আর চিনি আপনার শরীরে প্রবেশ করছে।