কিছু বিখ্যাত প্রেমের কবিতা, Some Famous Love Poems in Bengali

কিছু বিখ্যাত প্রেমের কবিতা

ভালোবাসার কবিতা মানুষের ভালবাসাকে জাগ্রত করে। প্রেমের কবিতাগুলি প্রেমের সাথে আসা উচ্চতর অনুভূতিগুলি বোঝাতে বিশেষ ভাষা ব্যবহার করে লেখা হয় যা আমাদের মন ছুঁয়ে যায়। অন্যদিকে প্রেমের কবিতাগুলিতে একটি সনেট বা ছড়াও থাকতে পারে, যা দুঃখ বা সুখের দুর্দান্ত অনুভূতি প্রকাশ করে। আজকের এই প্রতিবেদনে আমরা কিছু বিখ্যাত কবিদের রচিত প্রেমের কবিতা আপনাদের সামনে তুলে ধরবো।

ব্যর্থ প্রেম – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

ব্যর্থ প্রেম

প্রতিটি ব্যর্থ প্রেমই আমাকে নতুন অহঙ্কার দেয়
আমি মানুষ হিসেবে একটু লম্বা হয়ে উঠি
দুঃখ আমার মাথার চুল থেকে পায়ের আঙুল পর্যন্ত
ছড়িয়ে যায়
আমি সমস্ত মানুষের থেকে আলাদা হয়ে এক
অচেনা রাস্তা দিয়ে ধীরে পায়ে
হেঁটে যাই
সার্থক মানুষদের আরো-চাই মুখ আমার সহ্য হয় না
আমি পথের কুকুরকে বিস্কুট কিনে দিই
রিক্সাওয়ালাকে দিই সিগারেট
অন্ধ মানুষের শাদা লাঠি আমার পায়ের কাছে
খসে পড়ে
আমার দু‘হাত ভর্তি অঢেল দয়া, আমাকে কেউ
ফিরিয়ে দিয়েছে বলে গোটা দুনিয়াটাকে
মনে হয় খুব আপন
আমি বাড়ি থেকে বেরুই নতুন কাচা
প্যান্ট শার্ট পরে
আমার সদ্য দাড়ি কামানো নরম মুখখানিকে
আমি নিজেই আদর করি
খুব গোপনে
আমি একজন পরিচ্ছন্ন মানুষ
আমার সর্বাঙ্গে কোথাও
একটুও ময়লা নেই
অহঙ্কারের প্রতিভা জ্যোতির্বলয় হয়ে থাকে আমার
মাথার পেছনে
আর কেউ দেখুক বা না দেখুক
আমি ঠিক টের পাই
অভিমান আমার ওষ্ঠে এনে দেয় স্মিত হাস্য
আমি এমনভাবে পা ফেলি যেন মাটির বুকেও
আঘাত না লাগে
আমার তো কারুকে দুঃখ দেবার কথা নয়।

আমাকে ছেড়ে যাবার পর – হুমায়ূন আজাদ

আমাকে ছেড়ে যাবার পর – হুমায়ূন আজাদ

আমাকে ছেড়ে যাওয়ার পর শুনেছি তুমি খুব কষ্টে আছো।

তোমার খবরের জন্য যে আমি খুব ব্যাকুল, তা নয়।

তবে ঢাকা খুবই ছোট্ট শহর।

কারো কষ্টের কথা এখানে চাপা থাকে না।

শুনেছি আমাকে ছেড়ে যাওয়ার পর তুমি খুবই কষ্টে আছো।

প্রত্যেক রাতে সেই ঘটনার পর নাকি আমাকে মনে পড়ে তোমার।

পড়বেই তো, পৃথিবীতে সেই ঘটনা তুমি-আমি মিলেই তো প্রথম

সৃষ্টি করেছিলাম।

যে-গাধাটার হাত ধরে তুমি আমাকে ছেড়ে গেলে সে নাকি এখনো

তোমার একটি ভয়ংকর তিলেরই খবর পায় নি।

ওই ভিসুভিয়াস থেকে কতটা লাভা ওঠে তা তো আমিই প্রথম

আবিষ্কার করেছিলাম।

তুমি কি জানো না গাধারা কখনো অগ্নিগিরিতে চড়ে না?

তোমার কানের লতিতে কতটা বিদ্যুৎ আছে,

তা কি তুমি জানতে?

আমিই তো প্রথম জানিয়েছিলাম ওই বিদ্যুতে দপ ক’রে জ্বলে উঠতে পারে মধ্যরাত।

তুমি কি জানো না গাধারা বিদ্যুৎ সম্পর্কে কোনো

খবরই রাখে না?

আমাকে ছেড়ে যাওয়ার পর শুনেছি তুমি খুব কষ্টে আছো।

যে-গাধাটার সাথে তুমি আমাকে ছেড়ে চ’লে গেলে

সে নাকি ভাবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত শয্যাকক্ষে কোনো শারীরিক তাপের

দরকার পড়ে না।

আমি জানি তোমার কতোটা দরকার শারীরিক তাপ।

গাধারা জানে না।

আমিই তো খুঁজে বের করেছিলাম তোমার দুই বাহুমূলে

লুকিয়ে আছে দু’টি ভয়ংকর ত্রিভুজ।

সে- খবর পায় নি গাধাটা।

গাধারা চিরকালই শারীরিক ও সব রকম জ্যামিতিতে খুবই মূর্খ হয়ে থাকে।

তোমার গাধাটা আবার একটু রাবীন্দ্রিক।

তুমি যেখানে নিজের জমিতে চাষার অক্লান্ত নিড়ানো, চাষ, মই পছন্দ করো,

সে নাকি আধ মিনিটের বেশি চষতে পারে না।

গাধাটা জানে না

চাষ আর গীতবিতানের মধ্যে দুস্তর পার্থক্য!

তুমি কেনো আমাকে ছেড়ে গিয়েছিলে?

ভেবেছিলে গাড়ি, আর পাঁচতলা ভবন থাকলেই ওষ্ঠ থাকে,

আলিঙ্গনের জন্য বাহু থাকে,

আর রাত্রিকে মুখর করার জন্য থাকে সেই

অনবদ্য অর্গান?

শুনেছি আমাকে ছেড়ে যাওয়ার পর তুমি খুবই কষ্টে আছো।

আমি কিন্তু কষ্টে নেই; শুধু তোমার মুখের ছায়া

কেঁপে উঠলে বুক জুড়ে রাতটা জেগেই কাটাই, বেশ লাগে,

সম্ভবত বিশটির মতো সিগারেট বেশি খাই।

মোনালিসা – নির্মলেন্দু গুণ

নির্মলেন্দু গুণ

চোখ বন্ধ করলে আমি দেখতে পাই

সদ্য-রজঃস্বলা এক কিশোরীরে−

যে জানে না, কী কারণে হঠাৎ এমন

তীব্র তুমুল আনন্দ-কাতরতা

ছড়িয়ে পড়েছে তার নওল শরীরে।

মনুর ভাষায় গৌরী, এইটুকুনু মেয়ে

চমকে ওঠে নিজের পানে চেয়ে−

দেখে তার অঙ্গজুড়ে ফুলের উৎসব।

মনে হয় ছড়িয়ে পড়েছে মর্ত্যে

নার্গিস আর বার্গিসের স্বর্গপুষ্পঘ্রাণ।

মাকে ডেকে মেয়েটি শুধায়−

‘আমার শরীরে ফুলের সৌরভ কেন?

মেয়েরা বুঝি ফুলের উদ্যান?’

মেয়েকে বুকে জড়িয়ে ধরে মা বলেন,

‘বোকা মেয়ে, কিচ্ছু বোঝে না,−আয়,

আজ আমি কুসুমগরমজলে

তোকে নিজ হাতে গোসল করাব।’

মা’র বুকে মাথা পেতে মেয়েটি তখন

নিজেই কখন যেন মা হয়ে যায়।

এই লাভাস্রোত, এই সঙ্গকাতরতা

তাকে শেষে কোথায় ভাসিয়ে নেবে

জানে না সে; বোঝে না সে

তার বৃক্ষপত্রে কার হাওয়া লাগে?

অগ্নিকুন্ডে বায়ুর মতন ছুটে এসে

কে তাকে জড়াবে আদরে, সোহাগে?

জানে না সে, বোঝে না সে তার চোখে,

ঠোঁটে, তলপেটে, ঘুমভাঙা স্তনে

জেগেছে যে ঢেউ তার গন্তব্য কোথায়?

আনন্দ পুরুষে? নাকি আনন্দ সন্তানে?

এইসব দেহতত্ত্ব জানার আগেই,

এইসব গূঢ় গোপন রহস্যভেদ

হওয়ার আগেই

আষাঢ়ের এক বৃষ্টিভেজা রাতে

মোনালিসার বিয়ে হয়ে গেল−

লিওনার্দো দা ভিঞ্চির সাথে।

লিওনার্দো অতঃপর দীর্ঘ রাত্রি জেগে

জীবনের শেষ রং দিয়ে

তাঁর প্রিয়তমা তরুণী ভার্যা

মোনালিসাকে ক্যানভাসে আঁকলেন।

শিল্পের ঔরসে মোনালিসা গর্ভবতী হলে

স্বর্গ থেকে মখলুকাতে পুষ্পবৃষ্টি হলো।

সিন্ধুর বিজয়রথ পশিল নদীতে−

শান্ত হলো ক্ষিপ্তোন্মত্ত সমুদ্রের জল।

মোনালিসা, ইউরোপের প্রথম রমণী−

পুরুষের কান্ড দেখে হাসে।

পতিগৃহে পুরোনো প্রেমিক – নির্মলেন্দু গুণ

পাঁজরে প্রবিষ্ট প্রেম জেগে ওঠে পরাজিত মুখে,

পতিগৃহে যেরকম পুরোনো প্রেমিক

স্বামী ও সংসারে মুখোমুখি ।

প্রত্যাখ্যানে কষ্ট পাই,–ভাবি, মিথ্যে হোক

সত্যে নাই পাওয়া । বুকের কার্নিশে এসে

মাঝে-মধ্যে বসো প্রিয়তমা,

এখানে আনন্দ পাবে, পাবে খোলা হাওয়া ।

সেই কবে তোমাকে বুনেছি শুক্রে, শুভ্র বীজে,

যখন নদীর পাড় ঢাকা ছিল গভীর সবুজে ।

সময় খেয়েছে মূলে, বীজের অঙ্কুরে অমাক্রোধ,

দাবাগ্নিতে পুড়ে গেছে ভালোবাসা জনিত প্রবোধ ।

অহল্যাও পেয়েছিল প্রাণ জীবকোষে, পাথর-প্রপাতে

একদিন । তোমার অতনু জুড়ে কোনোদিন হবে নাকি

সেরকম প্রাণের সঞ্চার ? কোনদিন জাগিবে না আর?

পুরোনো প্রেমিক আমি কতো পুরাতনে যাবো?

ক্ষমা করো ভালোবাসা, প্রিয় অপরাধ ।

যদি কভু মধ্যরাতে পরবাসে ঘুম ভেঙে যায়,

যদি আচ্ছন্ন স্বপ্নের ঘোরে উচ্চারণ করো এই মুখ,

যদি ডাকো যৌবনের প্রিয় নাম ধরে–;

রুদ্ধশ্বাসে ছুটে যাবো পতিগৃহে পুরোনো প্রেমিক ।

মুখোমুখি দাঁড়াবো তোমার, যদি ক্ষমা পাই ।

শুধু তোমার জন্য – নির্মলেন্দু গুণ

শুধু তোমার জন্য – নির্মলেন্দু গুণ

কতবার যে আমি তোমোকে স্পর্শ করতে গিয়ে

গুটিয়ে নিয়েছি হাত-সে কথা ঈশ্বর জানেন।

তোমাকে ভালোবাসার কথা বলতে গিয়েও

কতবার যে আমি সে কথা বলিনি

সে কথা আমার ঈশ্বর জানেন।

তোমার হাতের মৃদু কড়ানাড়ার শব্দ শুনে জেগে উঠবার জন্য

দরোজার সঙ্গে চুম্বকের মতো আমি গেঁথে রেখেছিলাম

আমার কর্ণযুগল; তুমি এসে আমাকে ডেকে বলবেঃ

‘এই ওঠো,

আমি, আ…মি…।‘

আর অমি এ-কী শুনলাম

এমত উল্লাসে নিজেকে নিক্ষেপ করবো তোমার উদ্দেশ্যে

কতবার যে এরকম একটি দৃশ্যের কথা আমি মনে মনে

কল্পনা করেছি, সে-কথা আমার ঈশ্বর জানেন।

আমার চুল পেকেছে তোমার জন্য,

আমার গায়ে জ্বর এসেছে তোমার জন্য,

আমার ঈশ্বর জানেন- আমার মৃত্যু হবে তোমার জন্য।

তারপর অনেকদিন পর একদিন তুমিও জানবে,

আমি জন্মেছিলাম তোমার জন্য। শুধু তোমার জন্য।

সঙ্গিনী – শঙ্খ ঘোষ

সঙ্গিনী – শঙ্খ ঘোষ

হাতের উপর হাত রাখা খুব সহজ নয়

সারা জীবন বইতে পারা সহজ নয়

এ কথা খুব সহজ, কিন্তু কে না জানে

সহজ কথা ঠিক ততটা সহজ নয় |

পায়ের ভিতর মাতাল, আমার পায়ের নিচে

মাতাল, এই মদের কাছে সবাই ঋণী ––

ঝলমলে ঘোর দুপুরবেলাও সঙ্গে থাকে

হাঁ-করা ওই গঙ্গাতীরের চণ্ডালিনী |

সেই সনাতন ভরসাহীন অশ্রুহীনা

তুমিই আমার সব সময়ের সঙ্গিনী না ?

তুমি আমায় সুখ দেবে তা সহজ নয়

তুমি আমায় দুঃখ দেবে সহজ নয় |

তুমি – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

তুমি – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

আমার যৌবনে তুমি স্পর্ধা এনে দিলে

তোমার দু’চোখে তবু ভীরুতার হিম।

রাত্রিময় আকাশে মিলনান্ত নীলে

ছোট এই পৃথিবীকে করেছো অসীম।

বেদনা-মাধুর্যে গড়া তোমার শরীর

অনুভবে মনে হয় এখনও চিনি না

তুমিই প্রতীক বুঝি এই পৃথিবীর

আবার কখনো ভাবি অপার্থিবা কিনা।

সারারাত পৃথিবীতে সূর্যের মতন

দুপুর-দগ্ধ পায়ে করি পরিক্রমা,

তারপর সায়াহ্নের মতো বিস্মরণ-

জীবনকে, স্থির জানি, তুমি দেবে ক্ষমা

তোমার শরীরে তুমি গেঁথে রাখো গান

রাত্রিকে করেছো তাই ঝঙ্কারমুখর

তোমার ও সান্নিধ্যের অপরূপ ঘ্রাণ

অজান্তে জীবনে রাখো জয়ের সাক্ষর।

যা কিছু বলেছি আমি মধুর অস্ফুটে

অস্থির অবগাহনে তোমারি আলোকে

দিয়েছো উত্তর তার নব-পত্রপুটে

বুদ্ধের মূর্তির মতো শান্ত দুই চোখে।।

ভুল প্রেমে কেটে গেছে তিরিশ বসন্ত – তসলিমা নাসরিন

ভুল প্রেমে কেটে গেছে তিরিশ বসন্ত – তসলিমা নাসরিন

ভুল প্রেমে কেটে গেছে তিরিশ বসন্ত, তবু

এখনো কেমন যেন হৃদয় টাটায়-

প্রতারক পুরুষেরা এখনো আঙুল ছুঁলে

পাথর শরীর বয়ে ঝরনার জল ঝরে।

এখনো কেমন যেন কল কল শব্দ শুনি

নির্জন বৈশাখে, মাঘ-চৈত্রে-

ভুল প্রেমে কেটে গেছে তিরিশ বসন্ত, তবু

বিশ্বাসের রোদে পুড়ে নিজেকে অঙ্গার করি।

প্রতারক পুরুষেরা একবার ডাকলেই

ভুলে যাই পেছনের সজল ভৈরবী

ভুলে যাই মেঘলা আকাশ, না-ফুরানো দীর্ঘ রাত।

একবার ডাকলেই

সব ভুলে পা বাড়াই নতুন ভুলের দিকে

একবার ভালোবাসলেই

সব ভুলে কেঁদে উঠি অমল বালিকা।

ভুল প্রেমে তিরিশ বছর গেল

সহস্র বছর যাবে আরো,

তবু বোধ হবে না নির্বোধ বালিকার।

অভিমান – তসলিমা নাসরিন

কাছে যতটুকু পেরেছি আসতে, জেনো

দূরে যেতে আমি তারো চেয়ে বেশী পারি।

ভালোবাসা আমি যতটা নিয়েছি লুফে

তারো চেয়ে পারি গোগ্রাসে নিতে ভালোবাসা হীনতাও।

জন্মের দায়, প্রতিভার পাপ নিয়ে

নিত্য নিয়ত পাথর সরিয়ে হাঁটি।

অতল নিষেধে ডুবতে ডুবতে ভাসি,

আমার কে আছে একা আমি ছাড়া আর ?

আপন-পিয়াসী- কাজী নজরুল ইসলাম

আপন-পিয়াসী- কাজী নজরুল ইসলাম

আমার আপনার চেয়ে আপন যে জন

খুঁজি তারে আমি আপনার,

আমি শুনি যেন তার চরণের ধ্বনি

আমারি তিয়াসী বাসনায়।।

আমারই মনের তৃষিত আকাশে

কাঁদে সে চাতক আকুল পিয়াসে,

কভু সে চকোর সুধা-চোর আসে

নিশীথে স্বপনে জোছনায়।।

আমার মনের পিয়াল তমালে হেরি তারে স্নেহ-মেঘ-শ্যাম,

অশনি-আলোকে হেরি তারে থির-বিজুলি-উজল অভিরাম।।

 আমারই রচিত কাননে বসিয়া

পরানু পিয়ারে মালিকা রচিয়া,

সে মালা সহসা দেখিনু জাগিয়া,

আপনারি গলে দোলে হায়।।

আমার একলা ঘরের আড়াল ভেঙে- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আমার একলা ঘরের আড়াল ভেঙে- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আমার একলা ঘরের আড়াল ভেঙে

 বিশাল ভবে

 প্রাণের রথে বাহির হতে

পারব কবে।

প্রবল প্রেমে সবার মাঝে

ফিরব ধেয়ে সকল কাজে,

হাটের পথে তোমার সাথে

 মিলন হবে,

প্রাণের রথে বাহির হতে

পারব কবে।

নিখিল আশা-আকাঙক্ষা-ময়

দুঃখে সুখে, ঝাঁপ দিয়ে তার তরঙ্গপাত

ধরব বুকে।

 মন্দভালোর আঘাতবেগে,

তোমার বুকে উঠব জেগে,

শুনব বাণী বিশ্বজনের কলরবে।

প্রাণের রথে বাহির হতে

পারব কবে।

আমার প্রেমের মধ্যদিনে- শামসুর রাহমান

তোমার চুলের রাত্রি, শিখা-জিত আমাকে জড়ায়

 গনগনে দ্বিপ্রহরে। তোমার ব্যাকুল বাহুদ্বয়

 আমার বন্দর হয়, কী নিঃশব্দ, দীপ্র গীতময়

হয়ে ওঠে নিমেষেই কম্পমান তোমার অধর

আমার তৃষিত ওষ্ঠে আর ছোট ছায়াচ্ছন্ন ঘর

 রূপান্তরে ছলোচ্ছল জলপুরী, থর থর তুমি

 তরঙ্গিত নদী, কখনো বা গাঢ় বেদনার ভুমি,

তোমার চোখের জল আমার আত্মায় ঝরে যায়।

চুম্বনের পূর্ণতায় সত্তাময় বিষাদের সুর

বুনে দাও নিরুপায়, তুমি হয়ে যাও কী সুদূর।

 আমার প্রেমের মধ্যদিনে তোমার চোখের জল

নিবিড় আষাঢ় আনে সত্তায় খরায়, অবিরল

হাওয়া বয় হৃদয়ের ঝোপেঝাড়ে। থামে সব কথা,

তোমার অধর থেকে আমাকেই ছোঁয় অমরতা।

শেষ কথা :

আরবান ডিকশনারী প্রেমকে সংজ্ঞায়িত করে, “অন্য কাউকে যত্ন নেওয়া এবং দেওয়ার কাজ। আপনার জীবনে একজনের সর্বোত্তম স্বার্থ এবং সুস্থতাকে অগ্রাধিকার দেওয়া। সত্যিকার অর্থে ভালবাসা একটি নিঃস্বার্থ কাজ।” আশা করি আজকের এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা কবিতাগুলো আপনাদের মনোগ্রাহী হয়েছে।

RIma Sinha

Rima Sinha is a professional journalist and writer with a strong academic background in media and communication. She holds a Bachelor of Arts from Tripura University and a Master’s degree in Journalism and Mass Communication from Chandigarh University. With experience in reporting, feature writing, and digital content creation, Rima focuses on delivering accurate and engaging news stories to Bengali readers. Her commitment to ethical journalism and storytelling makes her a trusted voice in the field.

Recent Posts