যেখানে অন্য দেশগুলো এখনো সাগরের উপর ভেসে থাকার পরিকল্পনা করে, সেখানে চীন ডুব দিল সোজা সমুদ্রের গভীরে! হ্যাঁ, ঠিকই শুনছেন—বিশ্বে প্রথম স্থায়ী সাগরতল গবেষণা কেন্দ্র গড়ছে চীন। আর এই মেগা প্রজেক্ট একেবারেই বিজ্ঞান কল্পকাহিনিকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার মতোই!
২০২৫ সালের ১ মার্চ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হতে চলেছে এই প্রকল্প, যার নাম দেওয়া হয়েছে “কোল্ড স্লিপ জোন”। অনুমান করা যায় ২০৩০ সালের মধ্যেই এটি সম্পূর্ণরূপে কার্যকর হবে।
কিন্তু প্রশ্ন একটাই—চীন হঠাৎ সমুদ্রের নিচে ঘাঁটি গড়ছে কেন?

কারণ: “আগুনে বরফ”!
চীনের এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য সমুদ্রের গভীরে থাকা মিথেন গ্যাস উত্তোলন, যাকে বিজ্ঞানীরা বলেন গ্যাস হাইড্রেট—আর সাধারণ মানুষ চেনে “আগুনে বরফ” নামে।
এই গ্যাস হাইড্রেট এতটাই শক্তিশালী, যে এক কিউবিক মিটার বরফে লুকিয়ে থাকে ১৬০ কিউবিক মিটার মিথেন!
বিশেষজ্ঞদের দাবি, চীন যেই স্থানে কাজ শুরু করেছে, সেখানে ৮০ বিলিয়ন টন তেলের সমান শক্তি লুকিয়ে আছে!
এটাই যদি সফল হয়, তাহলে চীনই হবে ভবিষ্যতের জ্বালানি-সম্রাট!
বিজ্ঞান নয়, এটি কূটনীতিও!
এই গবেষণা কেন্দ্র বানানো হচ্ছে দক্ষিণ চীন সাগরে—একটি বিতর্কিত এলাকা, যেখানকার দখল নিয়ে চীন, ফিলিপাইন, ভিয়েতনামসহ একাধিক দেশের মধ্যে টানাপোড়েন।
সেই জায়গাতেই চীন বসাতে চলেছে ছয় বিজ্ঞানীর জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ গবেষণাগার। থাকবে খাবার, অক্সিজেন, ঘুমানোর ব্যবস্থা—এক কথায় সমুদ্রের নিচে এক ছোট্ট “সাই-ফাই” দুনিয়া!
আর এটিই ঘুম কেড়ে নিচ্ছে বিশ্বের অন্যান্য শক্তিধর দেশগুলোর—বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের!
কেন এত গুরুত্ব দিচ্ছে চীন মিথেনে?

- কয়লার চেয়ে বেশি শক্তিশালী, কিন্তু কম দূষণকারী
- মিথেন জ্বালিয়ে হয় কম কার্বন নিঃসরণ
- কয়লার বিকল্প হিসেবে এটি পরিবেশবান্ধব
- চীনের তেল আমদানি নির্ভরতা কমবে
- মালাক্কা প্রণালি-নির্ভরতা কমানোর কৌশলগত সুবিধা
কিন্তু আশার সঙ্গে ভয়ও আছে…
- গ্যাস হাইড্রেট অত্যন্ত সংবেদনশীল—চাপ বা তাপমাত্রার হেরফেরে বিস্ফোরণের আশঙ্কা
- দুর্ঘটনা ঘটলে সমুদ্রের নিচে ভূমিধস হতে পারে
- এর প্রভাব শুধু সমুদ্রেই নয়, উপকূলীয় দেশগুলোতেও পড়তে পারে
তবুও চীন থামছে না!
এই প্রজেক্ট শুধু জ্বালানি সংগ্রহ নয়—এটি ভবিষ্যতের নতুন যুদ্ধক্ষেত্রের প্রস্তুতি!
বিশ্বজুড়ে যেখানে ভূরাজনীতি ও শক্তির খেলা দিন দিন উত্তপ্ত হচ্ছে, সেখানে সাগরতলের এই গবেষণাগার হয়ে উঠতে পারে চীনের ‘ট্রাম্প কার্ড’।
শেয়ার করুন এই প্রতিবেদন, জানুক সবাই—যুগ বদলাচ্ছে, আর সেই বদলের নাম এখন “সাগরের নিচে চীন”!