দেশের প্রতিরক্ষার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের কল্যাণেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে ডিআরডিও (DRDO)। এবার তারা সমুদ্রের লবণাক্ত জলকে পানীয় জলে রূপান্তরের জন্য একটি অত্যাধুনিক ন্যানোপোরাস পলিমারিক মেমব্রেন তৈরি করেছে। এই প্রযুক্তি ভারতের বৈজ্ঞানিক জগতে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করল।
দেশীয় প্রযুক্তির জয়গান :

বহু বছর ধরে সমুদ্রের জল বিশুদ্ধ করার লক্ষ্যে নানা গবেষণা চললেও, এবার ডিআরডিও সেই প্রচেষ্টায় এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক ছুঁয়েছে। কানপুরের গবেষণাগারে আট মাস ধরে টানা গবেষণা ও পরীক্ষার পর এই সফল উদ্ভাবন সম্ভব হয়েছে। সম্পূর্ণভাবে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই মেমব্রেন কোনো বিদেশি সহায়তা ছাড়াই তৈরি হয়েছে, যা ভারতের আত্মনির্ভর হওয়ার লক্ষ্যের দিকেও এক বড় পদক্ষেপ।
পরীক্ষায় প্রাথমিক সাফল্য :
ডিআরডিও সূত্রে জানা গেছে, আগে ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর জাহাজগুলিতে ব্যবহৃত ডিস্যালিনেশন প্ল্যান্টে ব্যবহৃত মেমব্রেনগুলো লবণের উচ্চমাত্রার কারণে দ্রুত বিকল হয়ে যেত। নতুন এই পলিমারিক মেমব্রেন সেই সমস্যা দূর করতে সক্ষম হয়েছে। ডিএমএসআরডিই (DMSRDE) ও আইসিজি (ICG) যৌথভাবে একটানা ৫০০ ঘণ্টা ধরে একটি পেট্রোলিং ভেসেলে এই মেমব্রেনের কার্যকারিতা পরীক্ষা করেছে এবং প্রাথমিকভাবে অনুমোদনও মিলেছে। তবে চূড়ান্ত পরীক্ষা এখনো চলছে।

ভবিষ্যতের দিশা :
এই প্রযুক্তি যদি চূড়ান্ত পরীক্ষাতেও সফল হয়, তাহলে এটি কেবলমাত্র সেনাবাহিনী ও উপকূলরক্ষী বাহিনীর জন্য নয়, উপকূলবর্তী অঞ্চলে বসবাসকারী লক্ষ লক্ষ মানুষের জন্যও এক আশীর্বাদ হয়ে উঠবে। পানীয় জলের সংকট দূর করতে এটি একটি কার্যকরী সমাধান হতে পারে। ডিআরডিও-র এই উদ্ভাবন বিশ্বমঞ্চে ভারতের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সক্ষমতা প্রমাণ করবে এবং টেকসই জলসম্পদ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।